কথায় আছে মানুষ সৃষ্টিকর্তার সবচেয়ে সুন্দর সৃষ্টি। কিন্তু তার লিলা বোঝা বড় দায়! সাধারণ নিয়মের বাহিরেও তার এমন এমন সৃষ্টি রয়েছে যা দেখে নিজেদের চোখকেও বিশ্বাস করা যায় না! আমাদের এই পৃথিবীতে এমন অনেক মানুষ রয়েছে যাদের দৈহিক গঠন যারা দেখতে আমাদের থেকে কিছুটা ভিন্ন।

আমরা দেখতে কেমন হবো। আমাদের জন্ম কোথায় হবে সেটা সম্পুর্ন সৃষ্টিকর্তার হাতে। এর ওপর আমাদের কারোর কোন হাত নেই। অনেকে মনে করে যারা দেখতে সুন্দর তারা অনেক ভাগ্যবান বা ভাগ্যবতী। যারা কোন রোগের কারনে আট-দশজন থেকে আলাদা হয়, তাদের প্রতি আমাদের সহায়নুভুতি কাজ করে ঠিকই কিন্তু আমাদের উচিত তাদের উদ্দেশ্যে নেতিবাচক মন্তব্য না করা। কারন সবাই সৌন্দর্যের আলাদা আলাদা সংগা নিয়ে জন্মায়।

আজকের পোষ্টে আমরা আপনাদের এমন লোকের সাথে পরিচয় করিয়ে দেবো যা আমাদের থেকে কিছুটা ভিন্ন! কিন্তু সবকিছুর পরেও এরা নিজেদের জায়গা থেকে অটল।

১) জ্যোতি আমগেঃ

এই ছোট আকৃতির মেয়েটি আমাদের সকলের ভিষন প্রিয়। আর টিভি সিরিজের খুব জনপ্রিয় একটি মুখ! জ্যোতি নিজেকে খুব হ্যাপি আর আত্মবিশ্বাসী মনে করেন।


তিনি অনেক আমেরিকার হরর মুভিতে অভিনয় করেছেন। এবং রিয়েলিটি সোতেও এনাকে দেখা যায়। তাছাড়া এনার উপর একটি ডকুমেন্টারিও তৈরী করা হয়েছে। যেখানে এনার জীবনের অনেক অজানা কাহিনী তুলে ধরা হয়েছে। শুনে অবাক হবেন যে উচ্চতার বিচারে জ্যোতি পুরো পৃথিবীর সবচেয়ে ছোট আকৃতির মহিলা।


ছোট মেয়েদের মতো উচ্চতা হলেও জ্যোতির বয়স ২৭ বছর। জ্যোতির উচ্চতা মাত্র ৬২.৮ সেঃমিঃ। ইনি নাগপুরে জন্মগ্রহণ করেছেন। জ্যোতির উচ্চতা এত কম কেন, এই প্রশ্নটি নিশ্চই আপনাদের মনে ঘোরাঘুরি করছে! মুলত জেনিটক ডিসোটারের কারনে জ্যোতির উচ্চতা এতো কম। যা বিজ্ঞানের ভাষায় কন্ট্রোপাসিয়া নামে পরিচিত। এই ডিসোটারের কারনে শরীরের হাড় সাধারন নিয়মে বাড়তে পারে না। কিন্তু এই কম উচ্চতা জ্যোতির হাসি কেরে নিতে পারে নি।

২) সুলতান কোসেনঃ

এতক্ষন দূনিয়ার সবচেয়ে খাটো মানুষটির কথা শুনলেন। এবার আপনাদের জানাবো দূনিয়ার সবচেয়ে লম্বা মানুষটির সম্পর্কে। সুলতানের উচ্চতা ৮ ফুট ৩ ইঞ্চি। এই ব্যাক্তির শরীরের প্রতিটি অঙ্গ-প্রতঙ্গের উচ্চতা সাধারন মানুষের চেয়ে অনেক বেশি। শুধু এনার পায়ের উচ্চতা হচ্ছে ৩৬ সেঃমিঃ। ব্রেন টিউমার সুলতানের এই অসাধারন উচ্চতার জন্য দ্বায়ী।


উচ্চতা উনার জীবনকে অনেকটা জটিল করে তুলেছে। ছোট থেকে উনার এতো উচ্চতার জন্য উনাকে অনেক সমস্যার কবলে পরতে হতো। এত বেশি উচ্চতার জন্য সুলতানকে উনার স্কুল থেকে উনাকে বের করে দেয়া হয়েছিলো। পরে থাকে বাধ্য হয়ে কৃষিকাজ বেছে নিতে হয়েছিলো। তাছাড়া জুতা আর কাপরের ঝামেলা তো আছেই! এমনকি সুলতান কোন গাড়িতেও বসতে পারে না। টিউমারের কারনে সুলতানের চলাফেরার জন্য ষ্টেসার ব্যাবহার করতে হয়।

২০১২ সালে একজন ডাক্তার উনার চিকিৎসা করে। এবং উচ্চতা বৃদ্ধি বন্ধ করতে সক্ষম হয়। সুলতা এখন উনার স্ত্রীর সাথে

বিবাহ জীবনে অনেক ভালোই আছেন।

৩) ইসাইয়া একস্তাঃ

১৯৯৯ সালের ৩১ অক্টোবরে জন্মগ্রহণ করা ইসাইয়া একস্তা জন্মের পরে ডাক্তাদেরকে চিন্তায় ফেলে দিয়েছিলো। কারন ডাক্তাররা বলেই দিয়েছিলো যে একস্তা বেশিদিন বাচবে না। কয়েক বছর পর ডাক্তাররা বলেছিলো যে একস্তা কখনো হাটতে বা চলাফেরা করতে পারবে না। কিন্তু একস্তা আবারও ডাক্তারদের ভূল প্রমান করে দিয়েছিলো।


একস্তার জন্য ডাক্তারদের বলা একটা কথা মিলে গিয়েছিলো। ডাক্তাররা বলেছিলো একস্তা কখনো কথা বলতে পারবে না। কথা বলতে না পারলেও তিনি একজন র‍্যাপার। নিজের লেখা গানের মাধ্যমে তার সব অনুভূতিগুলো প্রকাশ করে। ট্রাপাইস নামের এক র‍্যাপারের সাথে পরিচয়ে একস্তার জীবন বদলে দিয়েছিলো।


পরে ২ জনে মিলে মিউজিক নিয়ে কাজ করা শুরু করে। এখন একস্তা পুরো দূনিয়ার কাছে উজ্জল দৃষ্টান্ত।

৪) সারা গিউর্টসঃ

সারা নামের এখন যাকে উপরে ছবিটিতে দেখতে পারছেন তার বয়স সম্পর্কে অনুমান করা সত্যি খুব কঠিন! এনাকে দেখতে ৫০ বছরের মনে হলেও সারার বয়স ২৯ বছর। বিরল এক রিসোর্টের কারনে সারার শরীরের চামরা

বয়ষ্কদের মতো কুচকানো। কোয়েলেনের কারনে এমনটা হয়েছে। আমাদের শরীরের ইলেক্ট্রিসিটির কোয়েলেনের কারনে সঠিক মাত্রায় থাকে। সারার মতো শরীর নিয়ে সমস্যা থাকলে অনেক মেয়েরাই হয়তো নিজেদের আড়াল করে রাখতে চায়। কিন্তু সারা তেমনটি করে নি। তিনি বর্তমানে একজন সফল মডেল।


৫) মারটিন সিডিঃ

জন্মের পর মারটিন প্রায় ৪ মাস হাসপাতালে ভর্তি ছিলো। কারন মারটিন দেখতে অনেক অদ্ভুত প্রকৃতির ছিলো। আর তার শরীরের অনেক অংশ স্বাভাবিক ছিলো না। ডাক্তারদের ভাস্যমতে এমন বাচ্চারা ৪ বছরের বেশি বাচে না। কিন্তু মারটিনের পিতা মাতা তার চিকিৎসা চালিয়ে যাচ্ছিলো। শেষে এক ডাক্তারের চিকিৎসায় ও উপরওয়ালার দোয়ায় মারটিন প্রানে বেঁচে যায়।

৬) মিশেল কিশঃ

এখন উপরের ছবিটিতে দেখতে পাচ্ছেন সে কোন পুতুল বা ছোট মেয়ে নয়। একজন প্রাপ্তবয়স্ক মেয়ে। উচ্চতার কারনে মিশেল কখনো পার্কে রাইডে চরার অনুমতি পেতো না। মিশেলের উচ্চতা একজন সাধারণ মানুষের কোমর পর্যন্ত। মিশেল হলারমান নামের এক ডিসোর্টে ভুগছেন। এই ধরনের রোগের ২৮ ধরনের রোগের সিল্টোম দেখা যায়। মিশেলের শরীরে ২৬ ধরনের রোগের সিল্টোম লক্ষ করা করা গেছে। বাকি ২ ধরনের সিল্টোম ব্রেইন ড্যামেজের জন্য দায়ী।  তিনি যেদিন জন্মগ্রহণ করেছিলো সেদিন পুরো দূনিয়াতে মাত্র ২৫০ জন এমন ডিসার্ট নিয়ে জন্মেছিলো।

৭) লোলিত পতিদারঃ

এই ভারতীয় ব্যাক্তিটির পুরো শরীর পশুদের মতো লোমে ঢাকা। এই রোগের নাম হাইপাই রিকোসিস। এই রোগের কারনে শরীরের লোমের বৃদ্ধি অনেকগুন বেড়ে যায়। লোলিতের মুখ ৫ সেঃমিঃ লোমের আবরনে ঢাকা থাকে। কিন্তু এই লোমের কারনে লোলিতের পড়াশোনা যে বন্ধ করতে হয় নি, এর জন্য লোলিত তার বন্ধুদের কাছে কৃতজ্ঞ!


অতিরিক্ত লোমের কারনে লোলিতের চোখে দেখতে ও শ্বাস নিতে সমস্যা হয়। কিন্তু এখন পর্যন্ত এই রোগের কোন ঔষধ আবিষ্কার হয়নি।

তো বন্ধুরা, আজকের পোষ্ট এখানেই শেষ করছি! পোষ্টটি ভালো লাগলে আপনার বন্ধুদের কাছে শেয়ার করবেন। আর নৃত্য নতুন এরকম সব মজার পোষ্ট পেতে সবসময় পাশেই থাকবেন!