আমি জানি অনেকেই এই মিনা রাজু কার্টুনকে চিনে না। কিন্তু যারা এই মিনা কার্টুনকে কখনো দেখেছে তারা কখনই এই কার্টুন ভুলবে না। কারন এটা তার ছোট বেলার একটি সৃতির কাটুন। এই কার্টুন সামাজিক অনেক সমস্যাকে ফোকাস করে তৈরী করা হয়েছে।
এই কার্টুন থেকে আমরা অনেক কিছু শিখতে পারি জানতে পারি। কিন্তু আপনাদের মধ্যে অনেকেই এটা জেনে অবাক হবেন যে মীনা রাজু কার্টুনের যে গল্প গ্রামের মেয়ে "মীনারুজ্জামান রোকেয়া" নামক মেয়েটির জীবনের গল্প থেকে তৈরী করা হয়েছে।
১৯৮০ সালে বাংলাদেশের কোন এক অজানা গ্রামে জন্ম হয় একটি মেয়ে শিশুর। তার নাম রাখা হয় মীনারুজ্জামান রোকেয়া। এবং তার ডাক নাম হলো মীনা। মীনার ২ বছর পরই মীনার একটি ছোট ভাইয়ের জন্ম হয় এবং তার নাম রাখা হয় "রাজাউদ্দিন আলাউন" এবং তার ডাক নাম থাকে রাজু।
কিন্তু তখনকার সময় মেয়েদের সাথে যেমনটা হতো ঠিক তেমনটাই হয়েছিলো মীনার সাথেও। মেয়ে হওয়ার জন্য তাকে অনেক ভৈসাম্য হতে হয়। মীনা তখন পড়ালেখা করতে চেয়েছিলো কিন্তু তার পরিবার তাকে স্কুলে গিয়ে পড়ালেখা করতে দেয় নি। মীনা খেলাধুলা করতে চেয়েছিলো কিন্তু তার পরিবার তাকে নিষেধ করে। মীনার জীবনে অনেক ইচ্ছে ছিলো যা পরিবার তাকে বারন করেছে। সে একজন মেয়ে ছিল, এ কারনে তার কোন অধিকার নেই এই সমাজে।
পরিবারে সব সময় মীনার ছোট ভাইকে অর্থাৎ রাজুকে বেশি মর্যাদা দেয়া হতো। এছাড়াও মীনার জীবনে মীনা অনেক ভৈসাম্যের স্বীকার হয়। মীনার বয়স যখন ১১ তখন তার অমতে মীনাকে বাল্যবিবাহ করিয়ে দেয়া হয়। কিন্তু এতো জুলুম করার পরও মীনা সব মেয়েদের মতো প্রতিবাদ করে না। ভাগ্যক্রমে মীনার স্বামী ছিলো শিক্ষিত। এবং সে শিক্ষার মর্যাদা বুঝতেন। একারনে বিয়ের পরও মীনার স্বামী মিনাকে লেখাপড়ার সুযোগ দেয়। নিজের পক্ষদ্বয় এবং স্বামীর অনুপ্রেরণায় মীনা তার লেখাপড়া শেষ করে, এবং সে একজন লেখিকা হয়।
মীনার লেখা বইয়ের মাদ্ধমে মীনা অনেক জনপ্রিয়তা লাভ করে, অনেক অর্থেরও আয় করে। ১৯৯০ সালে "মীনারুজ্জামান রোকেয়া" একটি বই প্রকাশ করে
যার নাম থাকে "মীনা রাজুর স্বপ্ন"। এই বইটি তিনি তার ছোটবেলা তার উপর যে জুলুম করা হয় তার প্রতিবাদে একটি মীনা ক্যারেক্টার তৈরী করেন। মীনা অনেক সচেতন, সে তার অধিকার আদায় করতে পারে, সে এ সমাজে প্রতিবাদ করতে জানে। ছোটবেলায় লেখিকা মীনারুজ্জামান রোকেয়া যা যা করতে পারেননি তা তিনি করিয়েছেন মীনা ক্যারেক্টারের মাধ্যমে। এবং এই মীনা রাজুর গল্প " UNICEF" নামক একটি বড় কম্পানির খুব পছন্দ হয়।
তারা মনে করেন এই গল্প যদি আমরা কার্টুন আকারে প্রকাশ করি তাহলে সমাজের অনেক উন্নতি হবে, এবং সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি পাবে। এবং UNICEF কয়েক বছরের মদ্ধেই মীনা রাজুর কার্টুন আকারে প্রকাশ করে। এই কার্টুনটি টিভিতে নানান ভাষায় নানান দেশে প্রকাশ করা হয়। মীনা রাজুর কার্টুনে মোট ৪১টি কার্টুন রয়েছে। এবং ৪১টি পর্বই মীনারুজ্জামান রোকেয়ার জীবন কাহিনী থেকে নেয়া হয়েছে।
তো বন্ধুরা আজকে এ পর্যন্তই, এরকম অজানা অনেক পোষ্ট পেতে আমাদের সাথেই থাকুন, আর আপনার বন্ধুদের কাছে শেয়ার করুন। আল্লাহ হাফেজ।
3 Comments
Tai nki
ReplyDeleteYes
Deleteভালো হয়েছে।
ReplyDelete